সবুজ পান পাতাগুলো হলুদ হয়ে ঝরেপড়া, কালোদাগ ও পাতাপঁচা রোগসহ দেখা দিয়েছে বিভিন্ন ছত্রাকের আক্রমণ। চাষীরা বাজারে কাঁচা পানের মূল্য পেলেও মূল্য পাচ্ছেন না পাকা পানে। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিপাকে পান চাষীরা গুনতে হচ্ছে লোকসান।
সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন পানের বরজ পরিদর্শন করে দেখা গেছে, বরজের সবুজ পান গুলোর মধ্যে কিছু পান সবুজ রয়েছে কিন্তু বেশির ভাগ পানই হলুদ রং ধরে গেছে অনেক পানে আবার ধরেছে পঁচন। বহু পান পড়ে আছে বরজের মাটিতে। আবার অনেক পানের লতা প্রায় পান শূণ্য। এতে করে যে সকল কৃষক সংসার চালাতে পান চাষের উপর নির্ভর এবং বিভিন্নভাবে ঋণ নিয়ে বরজের পরিচর্যা করেছে তারা ঋন পরিশোধ করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আর্থিক এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারী সহযোগীতাও চান অনেক ভোক্তাভোগী পান চাষীরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার প্রায় ৩০০ হেক্টর জমিতে রয়েছে পানের চাষ। মোট ১২ টি ইউনিয়নের মাঝে লেবুতলা, খিদিরপুর এদুটি ইউনিয়নের সকল গ্রামেই পানের বরজ আছে ৯৫% মানুষের এবং তাদের প্রধান অর্থকরী ফসল পান। তবে উপজেলার সকল ইউনিয়নেই কমবেশি পানের চাষ হয়। এই পান চাষে ঘুরেছে অনেকের ভাগ্যের চাকা। মনোহরদীর পান স্বাদের দিকদিয়ে অতুলনীয় হওয়ায় এলাকার চাহিদা মিটিয়ে উৎপাদনের ৮৫ ভাগ যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।
লেবুতলা ইউনিয়নের নোায়াকান্দী গ্রামের পান চাষী হেলাল উদ্দীনসহ কয়েকজন জানান, শীতের শুরু থেকেই বরজের পান হলুদ হয়ে আসতেছে। কোন প্রকার ঔষধে এর সমাধান হচ্ছে না। তবে উপজেলা কৃষি বিভাগ আমাদেরকে এই বিষয়ে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে আসছে।
খিদিরপুর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের পান চাষী মুকুল মিয়া জানান, প্রতি বছর শীতেই এমন সব সমস্যায় চরম ক্ষতির মধ্যে পড়তে হয়। আশা করছি বৃষ্টি হলে এই সমস্যা থাকবেনা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ঘন কুয়াশা এবং তীব্র শীতের কারণেই মূলত পান ঝরে পড়ে যাচ্ছে। শীতের শেষে বৃষ্টি শুরু হলে এই সমস্যা থাকবেনা। তবে শীতের শুরুতে বরজে চালার ছাউনি ঠিক থাকলে এবং বরজের চারপাশে পলিথিন দিয়ে ঢেকে পানের লতা কোয়াশার হাত থেকে রক্ষা করতে পারলে এ সমস্যা কম হবে। এছাড়াও বরজে সার প্রয়োগের সময় ইউরিয়া সার পরিমানে কম দিলে পান তুলনামূলক কম ঝরে পড়বে।
মনোহরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ আয়েশা আক্তার জানান, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস থেকে সর্বদা পান চাষীদেরকে সার্বিক পরামর্শসহ সহযোগীতা করা হচ্ছে।